প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, আমাদের দেশে সাক্ষরতার হার কম । কম সাক্ষরতার মানুষদেরকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে যুক্ত করাটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সাক্ষরতাটা আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ এবং এটি বেশি জরুরি। সে লক্ষ্যে আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআইকে) কিভাবে কাজে লাগাতে পারি তা নিয়ে আমরা ভাবছি।
‘আলোচকবৃন্দ বলেছেন- মানুষ একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। এখন মানুষের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে হবে, মানুষের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে উৎসাহিত করতে হবে, মানুষের চিন্তার প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করতে হবে এবং এ ছাড়া কোন বিকল্প নাই ।’ আমাদের যদি তাই করতে হয়- আমাদের শুরু করতে হবে শিশু বয়স থেকেই এবং সেটা কিন্তু আমরা সাক্ষরতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে করতে পারি।
উপদেষ্টা আজ ঢাকায় সেগুন বাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অডিটরিয়ামে আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও শিক্ষা: যান্ত্রিক স্বয়ংক্রিয়তার যুগে মানবসত্তা ও মানবিক ক্ষমতার স্বকীয়তা, সুরক্ষা এবং বিকাশ” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল সিদ্দিক জোবায়ের এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলাম এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মোঃ মাসুদ রানা।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের চিন্তার বাহন হলো ভাষা। আমাদের মুখের ভাষাই আমাদের মূল চিন্তার বাহন। এটার মাধ্যমেই আমরা চিন্তা করি। ভাষাকে আয়ত্ত্ব করা হচ্ছে, চিন্তাকে আয়ত্ত্ব করার প্রথম ধাপ। ভাষাকে আয়ত্ত্ব না করে অন্য কোন ক্ষেত্রেই সে অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না। এখন দেশে দেশে জোর দেয়া হচ্ছে সায়েন্স, টেকনোলজি এবং ম্যাথমেটিক্স এর উপর। আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে শিশুকে মাতৃভাষায় দক্ষ করে তোলা এবং যে ভাষা সে জন্ম থেকে শিখে নেয়। স্কুল তাকে অক্ষরের সাথে পরিচয় করায়।
মানুষের সৃজনশীলতা, মানুষের নৈতিকতাবোধ, সেটার উন্মেষ আমরা প্রাথমিক স্কুলেই করাতে পারি। এভাবে যদি করতে পারি তবে সে শিশুটি মাতৃভাষায় দখল নিয়ে গাণিতিক ভাষায় দখল নিয়ে বড় হয়ে গেল । আমাদের সফলতার দুইটা দিক। একটা হচ্ছে ভাষাগত দক্ষতা, আরেকটি হচ্ছে গাণিতিক দক্ষতা। গাণিতিক দক্ষতা দিয়ে তার সৃজনশীলতা, বৈচিত্র্যবোধ, নৈতিকতাবোধ এবং এভাবেই যদি একটি শিশুকে বড় করতে পারি, সেই কিন্তু ভালোভাবে সঠিকভাবে আইকিউকে আয়ত্ত্ব করতে পারবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আয়ত্ত্ব করতে পারবে এবং মানব কল্যাণে ব্যবহার করতে পারবে। সে আর দাস হবে না বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হবে তার হাতিয়ার। আমাদেরকে যদি জাতিগতভাবে এগিয়ে যেতে হয়, তাহলে সবাই মিলে এগিয়ে যেতে হবে। যদি আমাদের বৈষম্য বাড়তেই থাকে তাহলে আমরা অন্যদিকে যতই উন্নতি করিনা কেন সেটা খুব স্থায়ী হবেনা। অনবরত সামাজিক সংঘর্ষে তা নষ্ট হয়ে যাবে।