খাগড়াছড়িতে স্কুল শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা : ১৪৪ ধারা জারি
খাগড়াছড়িতে স্কুল শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা : ১৪৪ ধারা জারি
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত অক্টোবর ১, ২০২৪
আব্দুল্লাহ আল মামুন, খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার পর পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং গোলাগুলির ঘটনার জেরে জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার ০১অক্টোবর দুপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। সকালে পাহাড়িরা পিটিয়ে হত্যা করে সোহেল রানা (৪৮) নামে এ শিক্ষককে। এর জেরে পাহাড়ি-বাঙালী উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাহাড়ি এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৭ সালে কারাগারে যান সোহেল। সম্প্রতি তিনি মামলায় খালাস পেয়ে পেয়ে আবার কর্মস্থলে যোগ দেন। মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে পোস্টে ছড়ানো হয় যে, টেকনিক্যাল এলাকায় বাঙালিরা এক পাহাড়ি নারীকে তুলে নিয়ে গেছে। এরপর পাহাড়িরা দলে দলে এসে স্কুলে ঢুকে সোহেলকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। তবে আদৌ সেখান থেকে কোনো পাহাড়ি মেয়েকে তুলে নেয়া হয়েছিলো কিনা, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি। সোহেলকে হত্যার পরই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে খাগড়াছড়ি। পাহাড়ি-বাঙ্গালি দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীরা। বেশ কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই ছাত্রী আদালতে এসে পাহাড়ি একটি সংগঠনের চাপে মামলা করেছে মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং চাকরিতে যোগদান করেন। সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল। সকালে এক ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যা করে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষককে হত্যার প্রতিবাদে পাহাড়ি ও বাঙালি ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর করা হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র। আহত হয়েছেন ১৫-২০জন। পুরো শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় বলেন, উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের থামাতে গিয়ে আমি এবং জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সংবাদকর্মীরা আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে চোর সন্দেহে খাগড়াছড়িতে মামুন (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে পাহাড়িরা পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটায়। এরপর অশান্ত হয়ে ওঠে পাহাড়। এ ঘটনার জেরে পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই জেলায় খাগড়াছড়ি, রাঙfমাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।