২০২৪ সালের “জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ” আরো বহুধাপ এগিয়ে। সবুজের সমারোহ, রঙের মেলা, আল্পনার জাদুবাস্তবতা, গার্ডিয়ান শেড, নতুন নতুন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, নতুন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক, সাফল্যময় এইচএসসি রেজাল্ট, গোলাপের মনোরম ছাদবাগান, ডজন ডজন সাফল্য আর পুরস্কার এনে দিয়েছে মর্যাদা আর নান্দনিকতা। ফলে ২০২৪ এর জলসিঁড়ি আরো আকর্ষণীয়, আরো আদরণীয়।
মরুময় যে বালুবেলা ২০২৪ এ এসেও দেখা গেছে, সেগুলো আজ আবাসের সূচনায় পা রেখেছে। সময়ের ঢেউয়ে জলসিঁড়ির বিস্তর এলাকা জুড়ে নুড়িপাথরের জেগে ওঠার মতো গড়ে উঠেছে নিবাস, গড়ে উঠেছে পথের দেহ। আর এই দেহে শিকড় গেড়েছে বৃক্ষ, তৃণলতা, জলাশয়। সেই সাথে দেখা দিয়েছে হাজারো স্বপ্ন। এই স্বপ্নের চাতক পাখি আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীরা। দিন দিন আমাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠান “জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ”-এর সাথে সোনায়-সোহাগার মতো জড়িয়ে যাচ্ছে হাজারো অভিভাবক ও এই সপ্নালু শিক্ষার্থীরা।
স্বপ্নকে বাস্তবায়নের ম্যাজিক আছে কিংবা ম্যাজিক জানে, এমন অভিভাবক কল্যাণকর। চোখের সীমানায় এখনো লাল সূর্যের মতো দৃশ্যমান যে কর্মশক্তি, তা সমগ্র চব্বিশব্যাপী তীব্র ও প্রখর সূর্যের মতোই দেদীপ্যমান ছিলো। লে. কর্নেল মো: আনিসুজ্জামান, পিএইচডি স্যার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের ম্যাজিক জানেন। চলে যাওয়া ২০২৩ এর ভেলায় যে ফসলিবৃক্ষ ফল-ফুল দিতে পারেনি, তা চব্বিশে এসে পাতা আর পাপড়ি মেলেছে। এই ফসলের পিছনে যথার্থ মালির মতোই আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয় শ্রম ও সাধনা যোগ করেছেন। মধু-মোক্ষিকার কর্মযাত্রার মতোই সামনে থেকে জ্ঞানবৃক্ষের মধু আহরণ করেছেন। আর তার সাথে যথাযথ সঙ্গ দিয়েছেন সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। সম্মানিত চেয়ারম্যান স্যারের সার্বিক সহায়তা ও দিকনির্দেশনা এই কর্মযাত্রাকে ফলপ্রসূ ও নিষ্কণ্টক করেছেন। প্রিয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা তাতে দিয়েছেন শক্তি ও সমর্থন।
জ্ঞান ও ধ্যানের জন্য ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ সারা দেশব্যাপী সুনাম ও সম্মানের আসনে বসে আছে। শিক্ষার সাথে শরীরের যোগে মনোবিকাশের যে নিত্যকার খেলা, ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ তার বিস্তর ক্ষেত্র। বিএনসিসি, স্কাউট, ক্লাবসহ বিভিন্ন কার্যক্রম শিক্ষার সাথে সুস্বাস্থ্যের যোগাযোগ তৈরি করে তোলে। সেই সাথে করে তোলে মানবিক ও দেশপ্রেমিক। বিগত দিনে কিছুসংখক শিক্ষার্থী মাঠে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করলেও এখন সকল শিক্ষার্থীই সুযোগ অনুসারে দলবেঁধে মাঠে নেমে পরে। তাদের সাথে কখনো কখনো যোগ দেন শিক্ষকগণ। এমনকি সম্মানিত অধ্যক্ষ মহোদয়ও নেমে পরেন মাঠে। চব্বিসের সেই স্মৃতি ফোন ও ক্যামেরাবন্দি করে রেখেছে বহুজন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই মিলমেলা ও খেলাধুলা মন ও মননের অলিগলি আরো উৎকর্ষে ভরিয়ে তুলেছে, ভবিষ্যতেও উৎকর্ষ করবে।
২০২৪ সালে জলসিঁড়ি ক্যাটনমেন্ট স্কুল ও কলেজে নানান ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে। এবছর বার্ষিক ক্রীড়াপ্রতিযোগিতা হয়েছে বৃহৎ পরিসরে। হয়েছে উদ্যোক্তা মেলা, বৃক্ষমেলা, ফল-উৎসব, পিঠ-উৎসব। নানান শিক্ষা ও সামজিক বিষয়ে হয়েছে সেমিনার। সমাজের বৈশম্যকে দূর করার জন্য হয়েছে ‘বৈশম্যবিরোধী’ প্রোগ্রাম। সবথেকে কার্যকর যে প্রোগ্রাম হয়েছে, তা হলো মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কাউন্সিলিং। শ্রদ্ধেয় শিরিন মিসের একান্ত তত্বাবধান ও কাউন্সিলিংয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে কাউন্সিলিং হয়েছে সারাবছর। সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বাধ্যতামূলকভাবে এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রয়োজন সাপেক্ষে কিছু শিক্ষার্থীকে কাউন্সিলিং করানো হয়েছে। ঐচ্ছিকভাবে কাউন্সিলিংয়ে অংশগ্রহণ করেছে আরো অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ। ২০২৪ সালে এটি ছিলো সবথেকে সফল ও বড় আয়োজন। শিরিন মিসকে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী অভিভাবকের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।
চব্বিশ বিদায় নিচ্ছে, পঁচিশের কোলো চলে যাবে চব্বিশের সফলতা ও ব্যর্থতা। তবুও সব ছাড়িয়ে সফলতা থাকুক সবার উপরে, চব্বিশের জলসিঁড়ি ছড়িয়ে যাক সবার অন্তরে।