• ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে টাস্কফোর্স গঠনের জন্য অর্থ উপদেষ্টার নিকট ডিবিএ’র আবেদন

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে টাস্কফোর্স গঠনের জন্য অর্থ উপদেষ্টার নিকট ডিবিএ’র আবেদন

পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশে টাস্কফোর্স গঠনসহ বেশকিছু বিষয়ে সুপারিশ করে মাননীয় অর্থ উপদেষ্টার নিকট আবেদন করেছে পুঁজিবাজারের স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামের স্বাক্ষরিত উক্ত আবেদন পত্রটি রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ-এর বরাবরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ডিবিএ থেকে পাঠানো বার্তা মারফত জানা যায়, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশে টাস্কফোর্স গঠন সহ আরো বেশকিছু বিষয়ে সুপারিশ করে মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ-এর নিকট আবেদন করে ডিবিএ। উক্ত আবেদন পত্রে ডিবিএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রায় সত্তর বছর ধরে পুঁজিবাজারে এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, এবং অন্যদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ১৯৯২-১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে প্রায় ত্রিশ বছরেরও অধিক সময় ধরে একই খাতে প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এই দুটি সংস্থার সৃষ্টি, লক্ষ্য, কার্যকাল, ঐতিহ্য ও ভুমিকা বিবেচনা করলে “বাংলাদেশ পুঁজিবাজার” পুঁজি গঠনের উৎস এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি খাত থেকে অনেক দুরে। দু:খজনক বিষয় হলো, এই সুদীর্ঘ সময়ে এসেও আমাদের পুঁজিবাজার এখন পর্যন্ত একটি শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের খাত হিসেবে এবং একটি সর্ব সাধারণের টেকসই আয়ের খাত হিসাবে তৈরী হয়ে উঠেনি।

আবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকিং, অর্থনীতি, সংবিধান প্রভৃতি খাতের সংস্কারের জন্য কয়েকটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও নীতি অনুসরণ করে, পুঁজিবাজারের ন্যায় একটি বৃহৎ খাতের উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে আপনি শীঘ্রই পুঁজিবাজার খাতের সংস্কারের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের কথা বিবেচনা করবেন।

ডিবিএ পুঁজিবাজার খাতের সংস্কারের জন্য বেশকিছু সুপারিশ করে তা সদয় বিবেচনার জন্য অর্থ উপদেষ্টার নিকট অনুরোধ করে। সুপারিশগুলো নিম্নরুপ:

বিএসইসি পুঁজিবাজার খাতের উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশে সুবিধা দিতে সফল হয়নি। আমাদের বাজার সম্পূর্ণ ইক্যুইটি নির্ভর। ইক্যুইটি ব্যতিত আমাদের বাজারে আর কোন পণ্য নেই। গত বিশ বছর ধরে বন্ড মার্কেট আলোচনায় থাকলেও এর বিকাশে কার্যকর কিছুই করা হয়নি। পুঁজিবাজার থেকে সুফল পেতে আমাদের বিএসইসিকে পণ্যের উন্নয়ন বিকাশকরণ, নিয়ম-নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি শীর্ষ পর্যায়ে বিচ্যুতি, অপরাধমূলক কার্যক্রম, ইনসাইডার ট্রেডিং-এর তদন্তকাজে এবং এনফোর্সমেন্ট-এর দায়িত্বে নিযুক্ত থাকাটা আন্তর্জাতিক মানদন্ডে একটি স্বীকৃত পন্থা।

উন্নত বিশ্বের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মডেল থেকে দেখা যায় যে, তারা নিয়ম-নীতি প্রণয়নে উদার কিন্তু ব্যবহার ও বাস্তবায়নে কঠোর। উন্নত বিশ্বের পুঁজিবাজারে প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত এই মডেলটি আমাদের পুঁজিবাজার খাতের জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে। এই মডেল অনুসরণ করে তারা, এসইসি’র নীচে একটি স্ব-নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এসআরও) প্রতিষ্ঠা করেছে, যে সংস্থাটি সকল বাজার মধ্যস্থতাকারীর সমন্বয়ে কাজ করে এবং স্ব-নিয়ন্ত্রক ও সহায়কের প্রথম সারিতে থেকে অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং উচ্চ পর্যায়ের অন্যায় ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি-তে প্রেরণ করে।

  • এই মডেল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরবর্তী ৫-১০ বছরের জন্য পুঁজিবাজারের কৌশল নির্ধারণ করে এবং সেই অনুযায়ী পণ্য বিকাশের জন্য মনোনিবেশ করে।

কিছু দীর্ঘস্থায়ী পুরনো সমস্যা আমাদের বাজার বৃদ্ধির পথে অন্তরায় হয়ে আছে। যেমন, সময় অনুপযোগী এবং পুরনো মার্জিন অ্যাকাউন্ট নীতি, বিনিয়োগকারীর জন্য প্রতিকূল মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনা, আইপিও’র যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, ডেরিভেটিভস, বিকল্প, ভবিষ্যৎ, বন্ড ট্রেডিং, মর্টগেজ-ব্যাকড সিকিউরিটাইজেশন, ইত্যাদি পণ্যের ব্যাপারে কোন ধরনের দিক নির্দেশনার অনুপস্থিতি।

সরকারের বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজারে পণ্যের বিকাশ অত্যাবশ্যক এবং অপরিহার্য।

পরিশেষে, স্থানীয় এবং এনআরবি-এর জন্য “সঞ্চয়কে বিনিয়োগে” রুপান্তরিত করার জন্য আমাদের কাজ করা উচিত।

পুঁজিবাজার নিয়ে আলোচনার জন্য ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট মাননীয় অর্থ উপদেষ্টার নিকট একটি সভা প্রার্থনা করে।

June 2025
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930