প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, আমাদের টার্গেট হলো মিনিমাম সাক্ষরতা। শিশুরা মাতৃভাষায় সাবলীলভাবে বলতে পারবে, পড়তে পারবে, লিখতে পারবে। গাণিতিক বিষয়ে সাক্ষরতা অর্জন করবে। যদি শিশুরা সেগুলো পারে তাহলে বলব- আমরা লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। শিশুদের শিক্ষা দেয়ার বিষয়টি সাধারণভাবে বুঝা যায় এটি একটি সহজ কাজ। আমি বলব এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করছেন সমাজের জন্য, জাতির জন্য। একজন শিশুকে জীবনের চলার দিকটি করে দিচ্ছে শিক্ষক। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রধান শিক্ষক টিম লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমরা চাই প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে সুন্দরভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালিত হোক। প্রধান শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে টিম ওয়ার্ক করবেন। প্রধান শিক্ষক ভালো হলে স্কুল খুব ভালো চলবে।
উপদেষ্টা আজ লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের সাথে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার এর সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পিইডিপি-৪ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সাজ্জাদ, উপজেলা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং প্রধান শিক্ষকবৃন্দ।
উপদেষ্টা বলেন, যৌক্তিক দাবিকে আমরা স্বীকৃতি দেই, মন্ত্রণালয় কার্যকর করার চেষ্টা করে। শুন্যপদ পূরণে চেষ্টা করছি। অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে বলেন, পরিকল্পনায় কিছু সমস্যা রয়েছে, তবে অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। চোখে পড়ার মতো। প্রাথমিকে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে, বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি। মৌলিক শিক্ষার পাশাপাশি কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস যেমন- বিতর্ক প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা উৎসব, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য লক্ষ্মীপুর জেলায় ৭৩২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
এর আগে উপদেষ্টা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ‘জেলা প্রশাসন গ্রন্থাগার’ পরিদর্শন করেন।
বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে ‘ভ্রাম্যমাণ বইমেলার’ স্টল পরিদর্শন করেন।
দেশে প্রথম ‘আন্ত:প্রাথমিক বিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার’ পুরস্কার বিতরণ
উপদেষ্টা পরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দেশে প্রথমবারের মতো লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘আন্ত:প্রাথমিক বিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার’ ফাইনাল পর্ব উপভোগ শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ
দলের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন। বিতর্কের বিষয় ছিল “বিদ্যালয় নয়, পরিবারই সবচেয়ে বড় শিক্ষক।” প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লক্ষীপুর টাউন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রানার্সআপ রামগঞ্জ স্টেশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিকালে উপদেষ্টা লক্ষ্মীপুর জেলার টাউন হলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩,০০০ গরিব, অসহায় ও মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে শিখণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। আজ ৩০০ জনের মাঝে শিখণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।