‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপিত'”স্মৃতিচারণ করেন শহিদ বুদ্ধিজীবী সিরাজুদ্দিনের সন্তান জাহিদ রেজা নূর এবং শহিদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের সন্তান শমী কায়সার”
ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং
শিশু বয়সেই বাবাকে হারানো ও মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা শিশুদের সামনে তুলে ধরেন শহিদ বুদ্ধিজীবী সিরাজুদ্দিনের সন্তান জাহিদ রেজা নূর এবং শহিদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের সন্তান শমী কায়সার।
শহিদ বুদ্ধিজীবী সন্তান জাহিদ রেজা নূর বলেন, পঁচিশের কালরাতে পাকিস্তানিরা যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে সেটাকে শুধু গণহত্যা বলা যায়না সেটা হচ্ছে ‘জেনোসাইড’। তারা ধরে ধরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। যাতে করে এই জাতি আর কখনো দাঁড়াতে না পারে। ১০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৩ টায় আল বদরদের সাথে নিয়ে রুমে ঢোকে পাকিস্তানিরা। এরপর চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নেন আমার বাবাকে। এরপর একে একে সব সাংবাদিকদের তুলে নিয়ে যায়। এরপর ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তুলে নিয়ে যায়।
শহিদ বুদ্ধিজীবী শহিদুল্লাহ কায়সারের সন্তান, বিশিষ্ট অভিনেত্রী শমী কায়সার বলেন, ২০২৩ এর বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য একরকম আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগের দিবসের তাৎপর্য অন্যরকম। তখন বুদ্ধিজীবী দিবস বলতে ছিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা। আমরা কখনো কল্পনাও করিনি এদেশে বুদ্ধিজীবীদের বিচার হবে। বাংলাদেশের মাটিতে আজ যুদ্ধাপরাধীদের হত্যার বিচার হয়েছে। আর এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে কারণ একজন জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা আছেন। আজকের শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য অন্যরকম।
আজ ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী উপলক্ষ্যে স্মৃতিচারণ, আলোচনা অনুষ্ঠানে তারা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বিজয়ের ২দিন আগে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার, স্বাধীনতা বিরোধী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, বিজয়ের মাসে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বজ্র কঠিন শপথ নিতে হবে। যেকোন মূল্যে রুখে দিতে হবে দেশবিরোধী অপতৎপরতাকারীদের বিষ দাঁত ভেঙ্গে দিতে হবে।
তিনি বলেন,স্বাধীনতা বিরোধীরা বাঙালিদের দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী উপলক্ষ্যে স্মৃতিচারণ, আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচিব নাজমা মোবারেক বলেন, হানাদার বাহিনী দেশকে মেধা শুণ্য করতে তালিকা করে দেশের সুর্য সন্তানদের হত্যা করে। যার ফলে জাতি তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারায়।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুজ্জামান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. কেয়া খান, জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবেদা আক্তার ও দপ্তর সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে বইমেলার উদ্বোধন করেন। আলোচনা পর্ব শেষে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।