• ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৮ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

বাঘায় বীর প্রতীক আজাদ আলীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
বাঘায় বীর প্রতীক আজাদ আলীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত


রাজশাহীর বাঘায় ১৯৭১ সালের রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ আলী (বীর প্রতীক) এর প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারী) দুপুরে উপজেলার আড়ানী ডিগ্রি কলেজ মাঠে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানের জানাজা শেষে মরদেহ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাজধানীর বারিধারা এলাকার বিওএইসএস মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।

বীর প্রতীক আজাদ আলী রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার কুশাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাত ৯টায় ঢাকার সিএমএস হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। বর্তমানে তিনি ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএস এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

জাতীর এই সূর্য সন্তানকে শেষ বারের মতো এক পলক দেখার আশায় বুধবার সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ভিড় করেছিলেন । উদ্দেশ্য ছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর প্রতীক আজাদ আলীকে সম্মান জানানো। অবশেষে দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে তাঁর মরদেহ নিয়ে ঢাকা থেকে এসে পৌঁছায় আড়ানী মণোমোহিনী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। পরে মরদেহ আড়ানী ডিগ্রি কলেজ মাঠে নিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মি আক্তার ও বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসন গার্ড অব অনার দিয়ে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করেন।

গ্রামের সাধারণ মানুষ-সহ হাজার হাজার মানুষ তাঁর জানাজায় অংশ নেন
। জানাজা শেষে মরদেহ আবার ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বারিধারা বিওএইসএস মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

বাঘার মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের রণাঙ্গনে দেশের মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ আলী নাটোরের ঈশ্বরদী- রাজশাহী রেলপথ এবং আবদুলপুর রেলওয়ে জংশন রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পাকবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকাতে তার নেতৃত্বে একটি গেরিলা দল নিয়মিত রেলপথ সচল রাখার কাজ করত। এই কাজে ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর পাক হানার বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের সময় ছয়টি মাইন বিস্ফোরিত হলে তিনি তার বাম হাতের কবজি হারান। সেই যুদ্ধেই ১৬ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন। বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি “বীর প্রতীক” খেতাবে ভূষিত হন। আজাদ আলী মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন এবং মে মাসে ভারতে চলে যান। জুন মাসে তাকে মুক্তিবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে চাকুলিয়ায় প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়। প্রশিক্ষণ শেষে ৭ নম্বর সেক্টরের লালগোলা সাব-সেক্টর এলাকায় তিনি বেশ কয়েকটি গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন।

তাঁর মৃত্যুতে বাঘা ও আড়ানীবাসী গভীর শোকাহত।

February 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728