আমরা যদি স্বশাসনের দাবি করি বা সংবিধানে স্বীকৃতি চাই, সেটি দেশের বাইরের জন্য নয়—আমরা বাংলাদেশেই থাকতে চাই, এখানেই আমাদের অধিকার চাই
“আদিবাসী জুম্ম জাতির অস্তিত্ব নিশ্চিতকরণে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে অধিকতর সামিল হই”—এই শ্লোগানকে ধারণ করে শুরু হয়েছে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু ও বিহু উদযাপন কমিটির চারদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।
৯ এপ্রিল সোমবার সকালে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, “দেশে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে অন্তত তিনটির সঙ্গে আমি সংলাপ করেছি। লিখিত ও মৌখিকভাবে বলেছি এবং আমাদের স্বকীয়তা ও বাংলাদেশের বহুত্ত্ববাদের প্রতিফলিত হবে বলে আশা করেছি ,কিন্তু অধিকাংশ প্রতিবেদন আমাদের নিরাশ করেছে।”
তিনি বলেন, “আমি জাতিসংঘ মহাসচিবকেও জানিয়েছি, ১৯৬৪ সাল থেকে পাকিস্তান আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ‘ট্রাইবেল এরিয়া’ কেড়ে নেওয়া হয়। আজ আমরা যদি স্বশাসনের দাবি করি বা সংবিধানে স্বীকৃতি চাই, সেটি দেশের বাইরের জন্য নয়—আমরা বাংলাদেশেই থাকতে চাই, এখানেই আমাদের অধিকার চাই। কিন্তু সেই ন্যায্য অধিকার এখনও স্বীকৃতি পায়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তথাপি আমরা আশার দিকেই তাকিয়ে আছি।” দেবাশীষ রায় আরো বলেন, আশা রাখি সুন্দর একটি সংস্কার হয়ে আরো ভাল একটি সংবিধান পাবো এবং যথাযথ নির্বাচন হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য ও জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি উষাতন তালুকদার বলেন, “পার্বত্যাঞ্চলে বহু রক্ত ঝরেছে—আর নয়। আসুন, সবাই মিলেই শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটাই। এ দেশের আদিবাসীরা সমান অধিকার ও মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রাখে।”
অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। সভাপতিত্ব করেন বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা।
উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। এতে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষেরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশগ্রহণ করেন। র্যালিটি পৌর চত্বর থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত শোভাযাত্রা আকারে অনুষ্ঠিত হয়।
বিজু-সাংগ্রাই -বিসু-বিহু উদযাপন কমিটির উদ্যেগে আগামী ১০ ,১১,ও ১২ বিভিন্ন খেলাধুলা ,বলিখেলা ও কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসানো অনুষ্ঠানরে আয়োজন করা হয়েছে।