কথিত আছে, আরব দেশের একটি জাহাজ বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ডুবে যাওয়ার পর সেই জাহাজের বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা রাখাইন রাজ্যে বসতি গেড়েছিলেন, তারাই আজকের রোহিঙ্গা জাতি; তবে এই তথ্যের বহু দ্বিমত আছে। রাখাইন রাজ্য চাষাবাদের উপযোগী অত্যন্ত উর্বর ভুমি। মধ্যযুগে ভারতবর্ষের রাজাগণ বাংলা আসাম ত্রিপুরা বিহারের কৃষকদের চাষাবাদের জন্য রাখাইন রাজ্যে প্রেরণ করতেন এবং তাদেরকে অল্প খাজনার বিনিময়ে রাখাইন রাজ্যে বসতি গড়ার সুযোগ করে দিতেন। সেইসব কৃষকরাই আজকের রোহিঙ্গা জাতি – চার/পাঁচশ বছর যাবত তারা তাদের আদি নিবাসের সাথে যোগাযোগ রক্ষা ও আসাযাওয়া অব্যাহত রেখেছেন। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা ছাড়াও মগ মারমা সহ বিভিন্ন জাতের লোক বাস করতেন। তৎকালীন রাজাদের নমনীয়তার সুযোগে রাখাইনের মগ জাতির মানুষজন ঢাকা পর্যন্ত চলে এসেছিল, কিন্তু বাঙ্গালীরা মগদের গ্রহণ করতে পারেনি – এটা “মগের মুল্লুক” নয় বলে বাঙ্গালীরা মগদের রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত ‘মগের মুল্লুক’ শব্দটি বাংলাদেশে প্রচলিত আছে।
ব্রিটিশ শাসনামলেও রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যেই বাস করতেন, তবে এই জাতি কখনও মিয়ানমার রাষ্ট্রকে সমর্থন দেয়নি – চার/পাচ’শ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে বেঈমানি ছাড়া রোহিঙ্গাদের কোনো ইতিবাচক দিক খুঁজে পাওয়া যাবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও রোহিঙ্গারা পাকিদের পক্ষাবলম্বন করেছিল। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কখনোই মিয়ানমারের আধিপত্য মেনে নেয়নি। আমাদের পার্বত্য এলাকার চাকমাদের সাথে কিছু বিষয়ে সরকারের বিনবনা না হলেও চাকমারা কখনোই পুরোপুরি ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় নাই, কিন্তু মিয়ানমার সরকার ইহ জিন্দেগীতে রোহিঙ্গাদের মাঝে মিয়ানমার রাষ্ট্রর প্রতি আনুগত্যের বিষয়ে কখনোই তাদের বিন্দু পরিমাণ নমনীয়তা খুঁজে পায়নি। ভারত বিভাগের পর রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদি আন্দোলন শুরু করে দেয় – মাদক ব্যবসা আর চোরাগুপ্তা হামলা ব্যতীত রোহিঙ্গাদের জীবনের আর কোনো গঠনমূলক দিক নাই – বিশ্ব যখন জ্ঞানবিজ্ঞানে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে তখন রোহিঙ্গারা শিক্ষালয়ের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। এই অশিক্ষিত বর্বর জাতি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদ্রোহী রাজাকার; বাংলাদেশের জামাতে ইসলাম ছাড়া এই বিশ্বে রোহিঙ্গাদের তুলনা করার মতো আর কোনো জাতিগোষ্ঠী খুঁজে পাওয়া যাবে না। বর্তমানে উভয় গোষ্ঠীর ভণ্ড নেতারা লন্ডনে অবস্থান করে এখানে তাদের ধর্মান্ধ মূর্খ অনুসারীদের উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিষয়ে বাংলাদেশ কিংবা মিয়ানমার সরকারের করনীয় কি হওয়া উচিৎ তা আমার মতো মানুষের মস্তিষ্কে নাই – আপনাদের কোনো মতামত থাকলে বলতে পারেন।