• ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে : রাষ্ট্রপতি

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৯, ২০২৩
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে : রাষ্ট্রপতি

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে নৈতিকতা প্রদর্শন করে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আজ ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৩’ ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র জাতীয় নাট্যশালা অডিটরিয়ামে দেয়া এক ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি দুদককে জনগণের নির্ভরতা ও আস্থার স্থলে পরিণত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের ও আদেশ দেন ।
দুদককে একটি আধুনিক, পেশাদার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনার বা আপনাদের কোন ভুল পদক্ষেপে যেন কোন নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দেশ ও জনগণের সেবায় সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রাখুন।দুদককে জনগণের নির্ভরতা ও আস্থার স্থলে পরিণত করতে হবে।”
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “একজন দুর্নীতিবাজের পরিচয় কেবলই দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতিবাজদের কোন দল নেই, নীতি-আদর্শ নেই। তাই দুর্নীতিবাজরা যে দলেরই হোক, দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে হলে দুদককে আরো কৌশলী হতে হবে, প্রশিক্ষিত ও প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে।
বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে প্রযু্ক্তিগত উৎকর্ষের সাথে সাথে দুর্নীতিবাজদের কৌশলও বদলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দেশে-বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দুদককে নির্দেশ দিন রাষ্ট্রপতি।
তিনি প্রত্যাশা করেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে রূপকল্প-২০৪১, শত বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়ন এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে দুদক অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দুদক তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব কোন অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে নির্মোহ ও নিষ্ঠার সাথে সুষ্ঠুভাবে পালনের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারলেই আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন স্বার্থক হবে।
সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের কাছে দুদকের জবাবদিহি থাকা উচিত মনে করেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, জনগণ আশা করে দুর্নীতি দমন কার্যক্রমে কমিশনের সকল পর্যায়ের কর্মচারীগণ সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা প্রদর্শন করবেন।
“দুর্নীতি শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং পৃথিবীর কোনদেশই এর কুপ্রভাব থেকে সম্পূর্ণমুক্ত নয়। দুর্নীতি সমাজে বৈষম্যের সৃষ্টি করে, অর্থনৈতিক বিকাশ ও উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করে,” তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “তাই দুর্নীতি দমন করতে হলে পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে . . . পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা এবং ধর্মীয় অনুভূতিও দুর্নীতি রোধে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।”
তিনি ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে সে জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তোলারও তাগিদ দেন।
সাবেক এই দুদক কমিশনার গত ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পদ্মা সেতু অসত্য কেলেঙ্কারির ঘটনাসহ বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন।
তিনি বলেন, “তাইতো দুর্নীতি দমন কমিশনের সফলতায় আনন্দিত হই, আবার ব্যর্থতায় ব্যথিত হই।”
রাষ্ট্রপতি দুদকের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে প্রত্যেককে আইন সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
রাষ্ট্রপ্রধান দাপ্তরিক ও আইনী পদক্ষেপের পাশাপাশি দুর্নীতি কমাতে সমাজের সকল স্তরে জনসচেতনতা বাড়ানোর উপর ও গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক ও কমিশনার মোছা. আছিয়া খাতুন এবং কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

January 2025
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031