ধর্মমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পীঠস্থান।
আজ বিকালে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আমেরিকান মুসলিম এন্ড মাল্টি-ফেইথ উইমেন্স এমপাওয়ারমেন্ট কাউন্সিল আয়োজিত ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রীডম রাউন্ডটেবিলে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, আবহমান কাল থেকেই বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। প্রাচীন বাংলার রাজা শশাঙ্ক থেকে শুরু করে কিংবা তারও পূর্ব থেকে শুরু করে পাল আমল, সেন আমল ও মুঘল আমলের ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করা হয় তাহলে দেখা যায়, পাল আমলের কিছু সময় ছাড়া বাংলার জমিনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির তেমন কোন সংকট তৈরি হয়নি। প্রাচীন কাল থেকেই এদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ অত্যন্ত সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করে আসছে। উৎসব-পার্বনে সবাই মিলেমিশে একাকার। সবাই একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। দুঃখ -বেদনায় সমব্যাথী হয়ে পাশে দাঁড়ায়। এটাই বাংলাদেশ।
ধর্মমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের পিছনে অন্যতম নিয়ামক ছিলো ধর্মনিরপেক্ষতা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভূমিকা এক কথায় অসাধারণ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত হয় এবং এতে ধর্ম নিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সংবিধানে কিছুটা কাটাছেঁড়া করা হয়। কিন্তু বর্তমান সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর নির্বাচনি অঙ্গীকার অনুসারে পুনরায় ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংযোজন করা হয়েছে। সকল ধর্মকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে ধর্মমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টিকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেটা নিঃসন্দেহে প্রণিধানযোগ্য। ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি আমাদের সংবিধানে যেভাবে বিধৃত হয়েছে সেটা সত্যিকার অর্থেই মাইলফলক।
আইআরএফ রাউন্ডটেবিল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মিজ্ সিতারা নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটিএন বাংলা টেলিভিশনের সিইও সাজেদুর রহমান মুনিম। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধান চারটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ তাদের মতামত তুলে ধরেন।