কেন্দ্রীয় তহবিল হতে পোশাকশিল্প শ্রমিকদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ,চিকিৎসা সহায়তা ও শ্রমিকদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা সহায়তার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
দেশে প্রথম গার্মেন্টস সেক্টরে বড় কোনো ঝামেলা ছাড়া শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
ঢাকার উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ভবনের নুরুল কাদের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মৃত্যু জনিত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন দুই লাখ টাকা করে ২০০ জন, ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা সহায়তা পাচ্ছেন ৫০০ জন।
বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রথম যেদিন আমি চেয়ারে বসেছি, সেদিন মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে সফল একটি সভা করেছিলাম। ওই সভায় আলোচনা ছিল ঈদের আগে মালিক ভাইয়েরা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেবেন।তারা তাদের কথা রেখেছে।
দুইপক্ষের সহযোগিতায় আমরা এ কাজটি করতে সফল হয়েছি।আমি প্রধানমন্ত্রীকে আনন্দের সঙ্গে বলেছি, আমার মনে হয়, এবছরই প্রথম, গার্মেন্টস সেক্টরে বড় কোনো সংঘাত ছাড়া শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে।
আমি মালিক ভাইদের ও শ্রমিক ভাইদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক খুশি হয়েছেন। এ কৃতিত্ব আমার নয় এটা মালিক-শ্রমিক সবার। আমরা এখানে যারা আছি বিজিএমইএ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সবাই, মালিকরা ও শ্রমিকরা সবাই জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শিত।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন বঙ্গবন্ধু তার যৌবনের সোনালি দিন ১৪ বছর কারাগারে ছিলেন। তিনি এদেশের মানুষদের ভালোবাসতেন, দেশের গরিব-দুঃখী মেহনতি মানুষের পক্ষে কথা বলতেন। এটাই ছিল তার অপরাধ। আমরা সেই নেতার অনুসারী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো ছোট একটি দেশ বিশ্বের গার্মেন্টস সেক্টরে দ্বিতীয়। আমাদের কর্ম ব্যাপকতা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। আমার মনে হয় এটা বাঙালিদের জন্য গর্ভের জায়গা। সেই জায়গাটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।
বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এখানে বসিয়েছেন। আমি চাই, কোনোভাবেই যেন প্রধানমন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন না হয়, সেভাবেই আমরা কাজ করছি। এখানে কোনো ধরনের বিরক্ত হবার সুযোগ নেই। আমার তো মুক্তিযুদ্ধের সময় মৃত্যু হবার কথা ছিল, আল্লাহ আমার জীবনকে এক্সট্রেনশন করেছেন। এখানে কোনো অনিয়ম দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির সুযোগ নেই। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখতে পারেন। আমি আপনাদের (মালিক-শ্রমিক) যেকোনো সমস্যার সমাধানে কাজ করবো।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের রেশন কার্ডের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ঈদের পরের মাসে রেশন কার্ড কীভাবে দেওয়া হবে সেই কর্মপরিকল্পনা শুরু হবে।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বিকেএমইএ এর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ এর প্রেসিডেন্ট এম এম মান্নান (কচি), এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় তহবিলের মহাপরিচালক মোল্যা জালাল উদ্দিন,বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ও বিজিএমইএ এর পরিচালক বৃন্দ,ব্যবসায়ীবৃন্দ,গার্মেন্টস কর্মচারীরা ও মালিকদ্বয়,প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।