• ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও কিছু কথা – ইসহাক আলী

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত অক্টোবর ৫, ২০২০
বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও কিছু কথা – ইসহাক আলী

আজ সারা বিশ্বে যে দিবসটি পালিত হচ্ছে তাহলো বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ইউনেস্কো বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২০-এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘সংকটে নেতৃত্বদাতা, ভবিষ্যতের রূপদর্শী শিক্ষক’।

শিক্ষক হচ্ছেন মানুষ গড়ার দক্ষ কারিগর। তাঁদের হাতেই গড়ে ওঠে দেশ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যত। আদর্শ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গঠনে রয়েছে অপরিসীম ত্যাগ ও অবদান। প্রতিবছর বিশ্বের ১৯টি দেশে অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ ‘টিচার্স ডে’ পালিত হয়। কানাডা, জার্মানি, বুলগেরিয়া, আজারবাইজান, ইস্তোনিয়া, লিথোনিয়া, ম্যাকেডোনিয়া, মালদ্বীপ, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কুয়েত, কাতার, রাশিয়া, রোমানিয়া, সার্বিয়া, ইংল্যান্ড, মাউরেটিয়াস, মলদোভাতে পালিত হয়। এছাড়া আরো ১১টি দেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনটিতে শিক্ষক দিবস চালু রয়েছে।

ইউনেস্কো ১৯৯৪ সালে ৫ অক্টোবর কে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ ঘোষণা করে। মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষকদের সম্মান জানানোর জন্যই এর প্রচলন। এটি দেশ-বিদেশে ‘শিক্ষক’ পেশাজীবীদের জন্য সম্মান এবং পরবর্তী প্রজন্মও যাতে কার্যকরী ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে এই দিনটি পালন করে সেটাই মূখ্য উদ্দেশ্য।

শিক্ষক মোরা শিক্ষক,
মানুষের মোরা পরম আত্নীয়
ধরনীর মোরা দীক্ষক।
এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় এবং উপরোক্ত চরন গুলি দেখলে বুঝা যাবে দিবসটি আমাদের জন্য কত গুরুত্ব বহন করে। যুগে যুগে শিক্ষকরা আলোর দিশারী হয়ে কিংবা আলোকবর্তিকা নিয়ে গর্বের সাথে দেশ, জাতি এবং সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দেশভেদে শিক্ষকদের প্রাপ্তির তারতম্য দেখা গেলেও সম্মান বা মর্যাদার কোন ঘাটতি নেই। প্রাচীন কাল থেকে আজ অবধি জ্ঞানী-গুণী, রাজা-বাদশাহ কিংবা সমাজসেবকরা শিক্ষকদের সম্মানকে দিনকেদিন সমাসীন করে গেছেন। তাই আমরা যারা এই মহান পেশার একজন নগন্য সদস্য আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। আমাদের কোন কৃতকর্মের জন্য যাতে এই মহান পেশা কলুষিত না হয়, এটা মনে রাখতে হবে। সুনামধন্য শিক্ষক জাফর ইকবাল স্যারের একটা বক্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে ছিলো। তাহলো “আমরা কোন যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করি না, আমরা আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ার কাজ করি”।

অতএব বলা যায় মানব সম্পদ কিংবা জাতী গঠনে আমাদের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পরিতাপের বিষয় হলো, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিক্ষক সমাজ বরাবরই অবহেলিত ছিলো যদিও দেশ পরিচালায় নিয়জিত রাজনৈতিক কিংবা আমলা ব্যক্তিরাও কোন না কোন শিক্ষকের শিক্ষার্থী। অস্বীকার করার উপায় নেই বিগত দিনের তুলনায় এখনকার শিক্ষকরা কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। অনেক পরিবর্তন এসেছে শিক্ষায় কিংবা শিক্ষকদের আর্থিক জীবনে। তবে আমার কথা হলো শিক্ষা ক্ষেত্রে মান সম্মত শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন করতে হলে শিক্ষকদের সামাজিক এবং আর্থিক দিকটি সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সকল শিক্ষককে সম্মানিত করতে পারলে জাতি এবং দেশ যেমন উপকৃত হবে তেমনি নবরুপ পাবে স্বপ্নের সোনার বাংলার। মুজিববর্ষের এই স্বন্দ্বিক্ষনে বাস্তবায়িত হোক জাতীয়করণের স্বপ্ন।

প্রাচীন কাল থেকে এই পেশা লালিত পালিত করে যারা পৃথিবী থেকে চলে গেছেন এবং যারা এ-ই মহান পেশার জান্ডা হাতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।

লেখক: ইসহাক আলী
প্রধান শিক্ষক, মক্তদীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
জুড়ী, মৌলভীবাজার।

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930