• ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

যে সকল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের চরিত্রে কখনো অপবাদের কালিমা লাগে নি

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
যে সকল আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের চরিত্রে কখনো অপবাদের কালিমা লাগে নি

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয়, উৎকণ্ঠা, অস্বস্তি। কার নাম কখন আসে এ নিয়ে নানারকম গুঞ্জন, আতঙ্ক। কিন্তু বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ যে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে সাম্প্রতিক শুদ্ধি অভিযানে তাঁর কিছুটা হলেও বের হয়ে আসছে। তবে শুদ্ধি অভিযানের পক্ষে যারা আছে তারা মনে করছে যে, শুদ্ধি অভিযান না হলে একসময় আওয়ামী লীগের উপর জনরোষ তৈরি হত। আওয়ামী লীগের পরিণতি হতো বিএনপির মতই। আওয়ামী লীগ যে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না, দুর্নীতিকে সহযোগিতা করে না তাঁর একটা বড় সিগনাল শেখ হাসিনা দিলেন এই শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে।

শুদ্ধি অভিযানের আলোচনায় নানাজনের বিরুদ্ধে ছোটবড় নানারকম অভিযোগ আসছে। অভিযোগ থেকে বাদ যাচ্ছেনা অনেক হেভিওয়েট নেতারাও। অভিযোগ উঠছে কমবেশি সবার বিরুদ্ধেই। কারও অভিযোগ সহনীয় মাত্রার, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ অত্যন্ত বড়। যাদের বিরুদ্ধে খুব বড় মাত্রার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেই শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এরমধ্যেও দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা উজ্জ্বল। কলঙ্ক যাদেরকে স্পর্শ করেনি।

দুই সপ্তাহ শুদ্ধি অভিযানের পর দেখা যাচ্ছে যে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা যারা দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের পাশে দাড়িয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে একবিন্দু পরিমাণও দুর্নীতি, অনিয়ম বা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ওঠেনি। আওয়ামী লীগের দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, নব্বই ভাগ তৃণমূলের নেতারা ক্লিন, তাদের বিরুদ্ধে ন্যুনতম অভিযোগও নাই, তারা শুধু সংগঠন করেন। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের মঙ্গল কামনা ছাড়া আর অন্যকিছু করেন নাই। অনেকেই বলেন যে, তারা সুযোগ পায়নি এজন্যই সৎ আছেন। কিন্তু সুযোগ পেয়েও যাদেরকে কলংক স্পর্শ করেনি তাদের নিয়েই এই প্রতিবেদন।

অনুসন্ধানে এমন কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে, যাদেরকে ন্যুনতম দুর্নীতি স্পর্শ করেনি, যাদের বিরুদ্ধে ন্যুনতম অভিযোগও নাই। এরকম সংখ্যা আওয়ামী লীগে অনেক। তবে আমরা এই প্রতিবেদনে জাতীয়ভাবে পরিচিত এরকম কয়েকজনের কথা উল্লেখ করছি-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি অভিযোগও নাই। এই শুদ্ধি অভিযানের বিভিন্ন তদন্তে, অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এই মুহুর্তে সবচেয়ে নিষ্কলুষ ব্যক্তিত্ব। কেউ বলতে পারেনি যে শেখ হাসিনা কোন দুর্নীতিকে আশ্রয় দিয়েছেন বা অনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য কাউকে সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি যে দুর্নীতিকে কোন আশ্রয় প্রশ্রয় দেননি শুদ্ধি অভিযান হলো তাঁর সবচেয়ে বড় প্রমাণ।

বেগম মতিয়া চৌধুরী
টানা দুই মেয়াদে এবং মোট তিন মেয়াদে ১৫ বছর কৃষিমন্ত্রী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী। ওয়ান ইলেভেনের সময় তাকে ঘায়েল করার জন্য ওয়ান ইলেভেন সরকার অনেক তদন্ত করেছিল। কিন্তু দেখা গেছে আওয়ামী লীগের শুধু নিষ্কলুষ নয়, তিনি একটি অনুকরণীয় জীবনযাপন করেন। ন্যুনতম আয়ে তিনি সাদামাটা জীবনযাপন করেন। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদের উদাহরণ হলেন বেগম মতিয়া চৌধুরী।

ডা. দিপু মনি
ডা. দিপু মনি এবার দ্বিতীয়বারের মত মন্ত্রী হয়েছেন। প্রথম মেয়াদে মন্ত্রী থাকার সময় তাকে নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল তিনি ঘনঘন বিদেশ যান কিন্তু বিদেশ যাওয়া ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতি, অনিয়ম, কাউকে পক্ষপাত করা বা নিয়োগ বাণিজ্য তাকে স্পর্শ করেনি। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগে যারা নিষ্কলুষ নেতা, কলংক যাদেরকে স্পর্শ করেনি তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ডা. দিপু মনি। ডা. দিপু মনি বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ইয়াফেস ওসমান
ইয়াফেস ওসমান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। প্রথমে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, দু মেয়াদে তিনি পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, টেন্ডারবাণিজ্য বা ক্ষমতার অপব্যবহারের ন্যুনতম অভিযোগ নাই। আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে তখন নিস্তরঙ্গ স্রোতের মতন দাঁড়িয়ে আছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

ড. গওহর রিজভী
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষকতা ছেড়ে তিনি এসেছেন বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রধান যোদ্ধা শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করার জন্য। দীর্ঘ দশ বছর ধরে তিনি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। ড. গওহর রিজভীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়মের ন্যুনতম অভিযোগ ওঠেনি। তিনি একজন উপদেষ্টা হলেও সরকারী কোষাগার থেকে একটি টাকাও নেননি। এমনকি তিনি বেতন ভাতাও গ্রহণ করেন না।

আওয়ামী লীগের এরকম অনেক নেতা রয়েছেন শুদ্ধি অভিযানে যাদের বিরুদ্ধে ন্যুনতম অভিযোগও নাই। আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন যে, শুদ্ধি অভিযান আমরা স্বাগত জানাই এজন্যই যে এইসমস্ত অপকর্মের সঙ্গে গোঁটা আওয়ামী লীগ জড়িত নয়। আওয়ামী লীগের মুষ্টিমেয় কয়েকজন জড়িত। বাকী আওয়ামী লীগের কেউই এই ধরণের অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না। এই শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের তৃণমূল এবং উপরের দিকে সৎ রাজনীতিবিদের সংখ্যাই যে বেশি সেটিই প্রমাণিত হয়।

অনুসন্ধানে, মোঃ জাহিদুল ইসলাম জায়েদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক হাকালুকি অনলাইন। 

September 2024
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930