রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বিশ্বনবির মর্যাদা, সম্মান ও আলোচনাকে সবার উর্ধ্বে তুলে ধরেছেন। একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা এ বিষয়গুলো ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন– وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ‘আর আমি আপনার আলোচনাকে সুউচ্চ করেছি।’ (সুরা আলাম নাশরাহ : আয়াত ৪)- وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ‘আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ১০৭)- وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ‘আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ তা জানে না।’ (সুরা সাবা : আয়াত ২৮)
ফ্রান্সসহ বিশ্বের যেসব দেশ ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে এসব ধৃষ্টতা প্রদর্শন করছে, এতে তাদের দীনতা, অজ্ঞতা ও অসহায়ত্বই প্রকাশ পায়। আর মুসলিমদের কাছে এ বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় যে, বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত-সুন্নাহ তথা সুন্দর ও অতুলনীয় আদর্শগুলো তুলে ধরা। যার প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী মানুষ জানতে পারবে বিশ্বমানবতার জন্য কেমন ছিলেন বিশ্বনবি।
পশ্চিমা বিশ্ব যান্ত্রিক উন্নতির দিকে এগিয়ে গেলেও সভ্যতার শিখরে পৌছতে ব্যর্থ হয়েছে। মুসলিম উম্মাহ বর্তমানে বিপর্যস্ত ও পর্যুদস্ত হলেও ইসলাম বিদ্বেষীদের ঘৃণ্য আক্রমণ থেকে মুক্ত নয়। এর একমাত্র কারণ, ইসলাম, কুরআন ও বিশ্বনবির সুমহান আদর্শ বুকে ধারণ করে মুসলমান। যে কুরআন ও নবির আদর্শ অন্ধকার জগত থেকে মুমিন মুসলমানকে দেখায় আলোর পথ।
মুসলিম উম্মাহকে বিপথগামী করতে, বিশ্বের বুকে তাদের মনোবলকে ভেঙে দিতেই যুগে যুগে ইসলাম বিদ্বেষীরা কখনো ইসলামের উপর আক্রমণ করেছে। আবার কখনো বিশ্বনবির ব্যঙ্গ চিত্র প্রকাশ করে চালিয়েছে ঘৃণ্য অপপ্রয়াস। এ থেকেই প্রমাণিত ইসলাম, কুরআন ও বিশ্বনবির আদর্শ চিরন্তন সত্য ও এর বিবরণ যর্থার্থ।
আমাদের কিছুই করার ক্ষমতা হয়ত নাই- কিন্তু অন্তরের দহন তো কম হবার কথা নয়! সেই দহন কি আদতেই আছে? কতখানি? রাসুলের প্রতি ভালোবাসা ঈমানের শর্ত। নিজের ঈমানকে পরীক্ষা করে নিতে আর কোনও প্যারামিটার দরকার নাই!
আফসোস! আমরা তো কেবলই দুনিয়াকেই বেছে নিয়েছি! আহ! কা’বার রব্বের শপথ, ইতিহাসে মুসলমান আগে কখনো এত অসহায় ছিল না। আল্লাহ্ আমাদের অক্ষমতাকে ক্ষমা করুন।
ও আমাদের প্রতিপালক! এই অক্ষম নির্লজ্জ গোলামের তো আপনার কাছে দোআ করা ও ক্ষমা চাওয়া ব্যতিত আর কিছুই করার নাই!হে মহামহিম, অসীম ক্ষমতার অধিকারী, আমরা কেবলই আপনার মুখাপেক্ষী। আপনার প্রেরিত পুরুষ, সর্বশ্রেষ্ঠ যে নবী, তাঁর ইজ্জত আপনিই রক্ষা করুন।
ইয়া রাব্বাল কা’বা! এই উদ্ধত ফরাসি জাতি ও তার নিকৃষ্ট শাসকদের হিদায়াত ও বুঝ দিন। কিন্তু যদি তারা প্রকৃতই বক্র আর মোহরবিশিষ্ট অন্তরের অধিকারী হয় তবে তাদের ধ্বংস করুন। তাদের উপর আসমান ও জমিন এক করে দিন।
তাদের পর্বতসমূহকে উপড়ে ফেলুন। ভূমির ভারসাম্যতা বিনষ্ট হোক। সমুদ্র তাদের উপর আছড়ে পড়ুক। বাতাস ও আগুন তাদের গ্রাস করুক। আকাশ ও মাটি থেকে পানিকে সরিয়ে দিন। তাদের উপর দূর্ভিক্ষ আরোপ করুন।
আদ ও ছামুদ জাতির মত তাদের ধ্বংস করুন। সাবায়ীদের মত তাদের চাষযোগ্য ভূমিসমূহকে অনাবাদী ও রুক্ষ করে দিন। তাদের ফলসমূহকে তিক্ত করে দিন। আমালেকা জাতির মত তাদেরকে পরাজিত করুন। বনী ইসরাইলের মত তাদেরকে রাষ্ট্রহীন করে দিন। ইয়া রাব্বুল আলামিন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন। দয়া করুন। আমাদের ঐক্য ও মর্যাদাকে ফিরিয়ে দিন। অবিরত দুরুদ ও সালাম সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ সে নবীর উপর! আমাদের অনাগত বংশধরেরা তাঁর জন্য কুরবান হোক। আমাদের পিতা ও মাতা তাঁর সম্মানে কুরবান হোক। ফিদাকা আবি ওয়া উম্মি, ইয়া রাহমাতাল্লিল আলামিন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
এ আর / হাকালুকি