আমরা যেমন বায়ু সমুদ্রে ডুবে আছি কিন্তু তা খুব একটা খেয়াল করছি না তেমনিভাবে কি করে এই ইলুমিনাতির চক্রান্তে আমরা হাবুডুবু খাচ্ছি তা উপলব্ধি করার সময়টুকু আমাদের নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন গোপন সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম ইলুমিনাতি। ধারণা করা হয় বিল গেটস থেকে শুরু করে ডেনাল্ড ট্রাম্প, মাইকেল জ্যাকসন থেকে শুরু করে এঞ্জেলিনা জোলি পৃথিবীর এমন অসংখ্য প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় ব্যক্তিবর্গ ইলুমিনাতির সদস্য। ইলুমিনাতি কী? কিভাবে এর যাত্রা শুরু হয়েছিলো জানবো আজকের লেখায়।
এডাম ওয়েশপ্ট। ছবি – উইকিপিডিয়া
১৭৭৬ সালে জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশে এডাম ওয়েশপ্ট নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের হাত ধরে ইলুমিনাতি নামক গুপ্ত সংগঠন যাত্রা শুরু করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো সমাজ থেকে কুসংস্কার দুর করা এবং জনজীবনে ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় প্রভাব কমিয়ে আনা। এডাম তার চারজন ছাত্রকে নিয়ে এই গোপন সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করে। ইলুমিনাতির প্রতীক হিসাবে রোমান জ্ঞানের দেবী মিনার্ভার পেঁচাকে বেছে নেয়। গেপনীয়তা রক্ষার জন্য সংগঠনের সবাই নিজেদের ছদ্মনাম ঠিক করে। এডাম তার নিজের ছদ্মনাম ঠিক করে স্পার্টাকাস। সেসময়ে ইহুদী, প্যাগান ধর্মাবলম্বী, নারী ও অন্যান্য গোপন সংঘের সদস্যদের জন্য ইলুমিনাতির সদস্যপদ নিষিদ্ধ ছিলো। ১৭৮৪ সালে এর সদস্য সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৬৫০ এ। এডাম তার গুপ্তসংঘের কথা গোপন রাখতে চাইলেও সদস্য সংখ্যা বাড়ায় তা আর গোপন থাকে নি। ১৭৮৫ সালে বাভারিয়ার শাসক চার্লস থিওডর সকল গোপন সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেন। তখন এডাম ফ্রান্সে পালিয়ে যায়। পালিয়ে এলেও অল্পদিনেই আবার ইলুমিনাতির গোপন কার্যক্রম শুরু হয়। ১৭৯৮ সালে লেখক জন রবিসন তার ‘প্রুফস অফ কন্সপিরেসি’ বই প্রকাশ করেন। সে বইতে তিনি সেসময় ঘটে যাওয়া ইউরোপের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ফরাসি বিপ্লবের পেছনে ইলুমিনাতির জোরালো প্রভাব আছে বলে দাবি করেন।
বর্তমানে বহু সংগঠন নিজেদের ইলুমিনাতি বলে দাবী করে। যারা কোন ধরণের গোপনীয়তার ধার ধারে না। অনেকে ব্যবসা জমাতে ইলুমিনাতি নামে ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, টুইটার ব্যবহার করে সদস্য সংগ্রহের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এদের সাথে সেই বাভারিয়ান ইলুমিনাতির মিল কতটুকু তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে।