মহামারী করোনার কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। দীর্ঘদিন যাবত প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পরেছে। সেই স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেমন -সংসদ টিভির মাধ্যমে সকল শ্রেণীর ক্লাস সম্প্রচার, বিভাগ, জেলা,উপজেলা ও প্রতিষ্ঠান এ-র নামে অনলাইন ক্লাস চালুকরণ, যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের স্কুল পেইজের মাধ্যমে লাইভ ক্লাস চালু, মোবাইল নেটওয়ার্ক এ-র মাধ্যমে অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা, zoom app এ-র মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা।
এসব উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও শিক্ষার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়েছে এটা বলা যাবেনা। কারণ এ সব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অনেক অন্তরায় আছে। যেমন ডিস এন্টিনা সম্প্রচারিত সংসদ টেলিভিশন শহর এলাকায় কার্যকরী হলেও গ্রাম এলাকায় তা অপ্রতুল। তাছাড়া নেটওয়ার্ক সমস্যা, স্মার্টফোন এ-র মাধ্যমে পরিচালিত এ সব সুযোগ সুবিধা গ্রহন করার সক্ষমতা অনেক অভিভাবকদের নেই। বড়জোর ৬০% কিংবা ৭০% শিক্ষার্থীদের এর আওতায় আনা সম্ভব হলে ৩০% শিক্ষার্থী এ সেবা থেকে বঞ্চিত।
যাই হোক এরপরও হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। শিক্ষা বিভাগের মন্ত্রী মহোদয় থেকে শুরু করে সকল কর্তা ব্যক্তিবর্গ কিভাবে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তার চিন্তাভাবনা করছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা অফিসারগণ প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ভারচুয়াল মিটিং করে এর সমাধান কিংবা করণীয় পন্থা খোজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণ স্ব স্ব মতামত পেশ করছেন। যেহেতু বার্ষিক পরীক্ষা আসন্ন, তাই কিভাবে ছুটিকালীন সময়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে মূল্যায়ন করা যায় তা নিয়ে সবাই চিন্তিত।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন স্তরের মতামতের ভিত্তিতে কিংবা ভারচুয়াল মিটিং এর মাধ্যমে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের নিকট থেকে মতামত গ্রহণ করে মূল্যায়ন এর একটা সহজ পথ খোজার চেষ্টা করছেন। অনেকে অনলাইন এর মাধ্যমে মূল্যায়ন করার মত প্রদান করলে ও আমাদের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তা সম্ভব নয় আবার অনেকের মতামত হলো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে প্রশ্ন পত্র তৈরী করে বিদ্যালয় এরিয়ায় কয়েকটি শাখা চালু করে ৩০/৩৫জন শিক্ষার্থী কে জড়ো করে পরীক্ষা গ্রহন করা, আবার অনেকের মত হলো বাড়ি বাড়ি প্রশ্ন প্রেরণ করে পরীক্ষা গ্রহন করা। যতই চিন্তাভাবনা করা হউক না কেন, এসব পন্থায় মূল্যায়ন সম্ভবপর নয়।
এ প্রেক্ষিতে আমি আমার প্রস্তাবনা নিম্নে তুলে ধরছি।
প্রস্তাবনা: স্বাস্থ্য বিধি মেনে সশরীরে MCQ প্রশ্নের মাধ্যমে সকল বিষয় এর ৫০ নম্বরের প্রশ্ন পত্র তৈরী করে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা অন্তর অন্তর ১ টি শ্রেণী করে পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা গ্রহণ করে তার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে পরবর্তী ক্লাসের সুযোগ দেয়া যেতে পারে।
লেখক: ইসহাক আলী, প্রধান শিক্ষক, মক্তদীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, জুড়ী, মৌলভীবাজার।