• ২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

জুড়ীতে গ্রামবাসীর উপর মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত অক্টোবর ১৪, ২০২০
জুড়ীতে গ্রামবাসীর উপর মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক :: জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামবাসীর উপর মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে গ্রামবাসী। বুধবার সকাল ১১টায় স্থানীয় শাহগঞ্জ বাজারে এ মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, হারারগজ পাহাড় থেকে উৎপন্ন গোগালীছড়া নদী কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডি ও ভুকশীমইল এবং জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নে প্রবাহিত হয়ে হাকালুকি হাওরের খইয়া জুরী নদীতে গিয়ে মিশেছে। এ নদী থেকে সৃষ্ট অসংখ্য খালে পানি প্রবাহিত হয়। প্রবাহমান এ নদী ও খালের পানি সেচ দিয়ে উল্লেখিত তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক বোরো চাষ করেন। সেই সাথে এ এলাকার দরিদ্র মৎস্যজীবিরা উন্মুক্ত এ নদী ও খাল থেকে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল উক্ত নদীটি বদ্ধ দেখিয়ে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ৬নং রেজিস্টারভুক্ত করে ইজারা নেয়। প্রবাহমান নদী বদ্ধ দেখিয়ে ইজারা দেয়ায় পানি সেচে বিঘœ ঘটবে এবং প্রায় দশ হাজার একর জমির বোরো আবাদ ব্যহত হওয়ার আশংকায় ওই সময় চলমান নদীর ইজারা বাতিলের দাবিতে তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক ও দরিদ্র মৎস্যজীবি মানববন্ধন করি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করি। সে সময় জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো: কামরুল ইসলাম ইজারা প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিলেন- প্রবাহমান নদী ইজারা দেয়ার নিয়ম নেই। গোগালীছড়া নদীটি প্রবাহমান কি না তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
জনস্বার্থে চলমান নদীর ইজারা বাতিলের দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি সেটা আমাদের অধিকার। আমরা কাউকে বাঁধা প্রদান করিনি। ইজারাদাররা প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে শাহপুর গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন জায়গায় বারবার মিথ্যা অভিযোগ প্রদান করেন। নদীতে জাল ফেলতে না দেয়া, মাছ ধরতে না দেয়া, জাল লুটপাট করা ইত্যাদি অভিযোগ উত্থাপন করা হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলত ইজারাদাররা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার হীন মানসিকতায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ করে যাচ্ছেন।
আমরা নিরীহ গ্রামবাসী সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী প্রবাহমান নদী ইজারা দেয়া যাবেনা। সেই সাথে জাল যার, জলা তার কথাটি সাংবিধানিক ভাবে স্বীকৃত। গোগালীছড়া নদীটি বাস্তবে প্রবাহমান। কিন্তু একটি কুচক্রীমহল কাগজপত্রে এ নদীটিকে বদ্ধ দেখিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে ইজারা পাইয়ে দেয়। কৃষকরা জমিতে পানি সেচের সুবিধা ও দরিদ্র মৎস্যজীবিরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহের লক্ষ্যে ইজারা বাতিলের দাবি জানিয়ে আমরা আজ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে সরেজমিন উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের মাধ্যমে রেকর্ড সংশোধন ও ইজারা বাতিলের জোর দাবি জানাই। এ সময় গ্রামের বাসিন্দা মতছিন আলী মেম্বার, পাখি মিয়া, আব্দুল বারী, আব্দুল গাফফার, আইয়ুবুর রহমান, হাজী সলিমুল্লাহ, ইয়াছিন মিয়া, মিছবাহ উদ্দিন সুমেল, মহেষ বিশ্বাস, ইয়াকুব আলী, আনজির মিয়া, হাজির মিয়া প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সরেজমিন গোগালীছড়া নদীর নালিশা এলাকা পরিদর্শনে দেখা যায়, নদীর ৫টি স্থানে বড় বড় জাল পেতে জেলেরা মাছ ধরছে। আলাপচারীতায় জেলে আরফাত মিয়া ও ফারুক মিয়া বলেন, গোগালীছড়া নদীর এই স্থানে ৫টি জায়গায় জেলেরা মাছ ধরছে। কুলাউড়া উপজেলার বেগবানপুর গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের নিকট থেকে সাব লিজ এনে প্রায় দুই মাস থেকে আমরা মাছ ধরছি। এর আগে অন্যরা মাছ ধরেছে। তবে আমাদের মাছ ধরতে কেহ বাঁধা দেয়নি।

সিরাজুল ইসলাম / দৈনিক হাকালুকি

March 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031