কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সিনিয়র সদস্য মো. খইরুল আলম কয়ছর মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া সংসদীয় আসনের ধানের শীষ প্রতীকের বিজয়ী সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের স্থানীয় এলাকার সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়ে দায়িত্ব গ্রহন করলেন। এই খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাজানি হলে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যুবলীগের এই নেতাকে নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনা চলছে।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ সরকার বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও রাজনৈতিক দল গণফোরামে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়ে সদস্যপদ গ্রহন করে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী মৌলভীবাজার -০২ কুলাউড়া সংসদীয় আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এদিকে সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের উপজেলা কমিটির নেতা মো. খইরুল আলম কয়ছর কিভাবে ধানের শীষের এমপির স্থানীয় রাজনৈতিক সমন্বয়ক কিভাবে হলেন ও যুবলীগের গঠনতন্ত্রে এরকম কোন বিধি নিষেধ নেই? এমন প্রশ্ন সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা প্রশ্ন রাখছেন।
কুলাউড়া উপজেলার কয়েকজন যুবলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যুবলীগ হল আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন আর খইরুল আলম কয়ছর সরকার বিরোধী জোটের এমপির স্থানীয় বিভিন্ন কাজের দায়িত্বশীল সমন্বয়ক হলেন সেটি শুনে খুবই হতাশ হলাম। আবার তাও ধানের শীষ প্রতীকের এমপির। সত্যিই এই লজ্জা কোথায় রাখি আমরা। তারা আরো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন তার মানে যুবলীগ নেতা কয়ছর আলম বেগম খালেদা জিয়াকে মনে মনে ভালোবেসে যুবলীগ করেন সেটি প্রমানিত হল। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের কাছে কয়ছর আলমকে বহিষ্কার করার দাবি জানান।
এবিষয়ে যুবলীগ নেতা মো. খইরুল আলম কয়ছর ধানের শীষ প্রতীকের বিজয়ী সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ছোট মানুষ। এই দায়িত্বটি অনেক বড় তাই কিভাবে চালাবো। যদি আপনারা কুলাউড়ার সকল সাংবাদিক ঐক্য হয়ে আমিসহ এমপি সাহেবকে সহযোগীতা করেন তাহলে অবশ্যই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো । এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি দায়িত্বে ছিলাম। এক পর্যায়ে তিনি অনুরোধ করে বলেন বর্তমান উপজেলা যুবলীগের পদটি গণমাধ্যমে যেন প্রকাশ না হয়। তবে যুবলীগের সাবেক পদ লিখলে কোন সমস্যা হবে না। পাশাপাশি আরো বলেন এমপি সাহেব আমাকে মৌখিকভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। আমার অফিসে আপনার চায়ের দাওয়াত রইলো।
মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি নাহিদ আহমদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, এসব অবশ্যই আমাদের গঠনতন্ত্রে কোন ভাবেই পড়েনা। কারণ আমাদের আওয়ামীলীগ দলীয় এমপি ছাড়া দলের বাহিরে কোন এমপির সাথে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমি এবিষয়ে অবগত নয়। কুলাউড়ায় অনেক রাজনৈতিক বিষয় আমি অভিযোগ পেয়ে থাকি। করোনা পরিস্থিতির সময় ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। বিশেষ করে ওই সময়ের কঠিন পরিস্থিতির কারনে আমরাও যুবলীগের কোন বর্ধিতসভা করা সম্ভব হয়নি। এজন্য দলীয় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতে পারিনি। দলের অনেকে অনেক কিছু বিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করছে। তিনি (সুলতান মনসুর) অনেক সময় মুজিব কোট গা দিয়ে বিভিন্ন সময় কুলাউড়ায় অবস্থান করেন। উনি তাদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেন। এবং তিনি দেখান বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার রাজনীতি করেন। সুলতান মনসুর এক সময় আওয়ামীলীগ করেছেন এখন আর নেই যেহেতু ধানের শীষে নির্বাচন করেছেন। জেলার এই সভাপতি আরো বলেন,দলের বিরুদ্ধে কাজ করার কোন সুযোগ নেই। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান পরশ ও সাধারণ সম্পাদক নিখিলের নির্দেশের বাহিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আসাদুর রহমান / দৈনিক হাকালুকি