• ১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৭ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

পেয়াজের বাজারে হুলস্থুল, অনেক জায়গায় বিক্রি বন্ধ

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
পেয়াজের বাজারে হুলস্থুল, অনেক জায়গায় বিক্রি বন্ধ

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবরে বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল থেকে এ অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। আমদানি বন্ধের খবরে রাজধানীসহ দেশের বাজারগুলোয় ক্রেতারা পেঁয়াজ কিনতে ভিড় জমায় আর খুচরা বিক্রেতারা ছোটেন পাইকারি বাজারে। এই হুলুস্থুল পরিস্থিতিতে বিক্রেতারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। গতকাল সকালে পাইকারি বাজারগুলোয় ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বিকেলে আমদানি বন্ধের খবরে কেজিপ্রতি বাড়িয়ে দেওয়া হয় পাঁচ থেকে ১০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও। খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ গতকাল সকালে বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে আর সন্ধ্যায় কোনো কোনো বাজারে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি বন্ধের খবর সত্যি হলে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়বে। তবে বিপরীত কথাও বলেছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, ‘এবার সরকার আগে থেকেই পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে আর টিসিবির মাধ্যমেও খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে এবার গত বছরের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না।’

এদিকে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়লে অনেক বিক্রেতা পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। ফলে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে অনেক ক্রেতাকে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে।

গতকাল সকাল থেকে বেনাপোল ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্রেতাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। গত সপ্তাহ থেকে ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও দাম বেড়ে ৪৫ টাকার দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয় আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা থেকে উঠে আসে ৬০ টাকায়।

গতকাল শ্যামবাজারের রাজ ট্রেডার্সের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সকালে ৩৯ টাকা পর্যন্ত দামে আমদানি করা পেয়াজ বিক্রি করেছি। বিকেলে ব্যাপারীরা ফোন দিয়ে আমদানি বন্ধের খবর দেন। একই সঙ্গে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বলেন। আমরা আড়তদার। কমিশনে ব্যাপারীদের পেঁয়াজ বিক্রি করি। ফলে বাজারদরেই আমাদের বিক্রি করতে হবে। বাজারে বাড়লে আমরা কমে বিক্রি করতে পারব না।’

ওই বাজারের রুনা বাণিজ্যালয়ের বিক্রেতা মো. ইলিয়াস বলেন, ভারত থেকে আমদানি বন্ধের খবরে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়তে পারে।

বিষয়টিকে বাজারের স্বাভাবিক গতি বলে মনে করছেন শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. মাজেদ। তিনি বলেন, ‘এটাই স্বাভাবিক। ভারতে বাড়লে কিংবা রপ্তানি বন্ধ করলে আমাদের দেশে দাম বাড়বেই। সেটা দেশি হোক কিংবা আমদানি করা পেঁয়াজ হোক। আমাদের পেঁয়াজের বাজার অনেকটা ভারতের ওপর নির্ভর করে।’

গতকাল রাজধানীর মালিবাগ, গোপীবাগ, মানিকনগরসহ বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিকেল থেকে পেঁয়াজের দোকানে ক্রেতারা ভিড় করছে। সন্ধ্যায় এই ভিড় আরো বেড়ে যায়। বিক্রেতারা বলছেন, সব ক্রেতাই অন্তত পাঁচ কেজি করে কিনছে।

মানিকনগর বাজারের ব্যবসায়ী আউয়াল বলেন, অফিস ছুটির পর বাসায় ফেরার পথে অনেকে এত দিন এক কেজি বা দুই কেজি করে পেঁয়াজ নিত, কিন্তু আজ (গতকাল) প্রত্যেকে পাঁচ কেজির অর্ডার করছে। ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

খুচরা দোকানি আউয়াল গতকাল বিকেলে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করছিলেন ৭০ টাকা কেজি দরে। গতকাল সকালে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৫৫ টাকা।

একই অবস্থা ঢাকার বাইরেও। গতকাল কিশোরগঞ্জের ত্রিশাল বাজার থেকে সুজা মিয়া নামের এক বিক্রেতা ফোনে অভিযোগ করেন, ত্রিশাল সদরের পাইকারি ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন না। তাঁরা দোকান বন্ধ করে চলে গেছেন। ফলে বাজারে অনেক ক্রেতার ভিড় জমে গেছে। তাঁর দাবি, অতিমুনাফার আশায় পাইকাররা বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, হুজুগে অনেকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পেঁয়াজ কিনতে শুরু করেছে। এ কারণে অনেকে বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।

সৌজন্যেঃ কালের কণ্ঠ

May 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31