• ২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

বাবলা চৌধুরী – সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার সাহসীকতায় ধামাচাপা দেওয়া যায়নি এমসি কলেজের নারকীয় সেই ঘটনা

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
বাবলা চৌধুরী – সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার সাহসীকতায় ধামাচাপা দেওয়া যায়নি এমসি কলেজের নারকীয় সেই ঘটনা

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে ধর্ষণের পর তা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছিলো ধর্ষকরা। তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন সরকার দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতাও। পুলিশও প্রথমে এতে সায় দেয়। তবে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার সাহসীকতা আর অনমনীয়তায় ধামাচাপা দেওয়া যায়নি নারকীয় সেই ঘটনা।

জানা যায়, শুক্রবার রাতে ছাত্রাবাসে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর প্রাইভেটকার আটকে রেখে স্বামীসহ তাকে ছেড়ে দেয় ধর্ষকরা। তাদের টাকা-পয়সা এবং স্বর্ণলাংকারও ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। এরপর কাঁদতে কাঁদতে ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে আসেন ওই তরুণী ও তার স্বামী।

টিলাগড় পয়েন্টে তাদের কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন ওই এলাকার বাসিন্দা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিহিত গুহ চৌধুরী বাবলা। যিনি বাবলা চৌধুরী নামেই। বাবলা চৌধুরীর কাছে ছাত্রবাসের নারকীয় ঘটনার বর্ণণা দেন ওই তরুণ-তরুণী। এরপর বাবলা ফোন দেন শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। তবে পুলিশ আসার আগেই ওই তরুণ-তরুণীকে নিয়ে ছাত্রাবাসের দিকে রওয়ানা দেন বাবলা।  

সে রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে বাবলা চৌধুরী সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, ছাত্রাবাসে গিয়ে আমি সাইফুর-রবিউলসহ কয়েকজনকে দেখতে পাই। আমাকে দেখেই তারা ওই দম্পত্তির গাড়ি চাবি ও মোবাইল ফোন আমার হাতে তুলে দেয়। তারা এগুলো ফেলে গেছে বলে সাইফুর আমাকে জানায়। চাবি আর মোবাইল নিয়ে আমি পুণরায় ছাত্রাবাসের গেইটে এসে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।

বাবলা চৌধুরী বলেন, ছাত্রাবাসে প্রবেশের আগেই ওই তরুণীর স্বামীর মোবাইলে একটি কল আসে। এসময় আমি তার হাত থেকে ফোনটি নিয়ে কথা বলি। কল করেছিলো সাইফুর। ফোনে ওই দম্পত্তিকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য শাসাচ্ছিল সাইফুর। আমি তখন আমার পরিচয় দিয়ে বলি- ‘আমি আসছি, দেখি তোরা কী করতে পারস’।

ধর্ষণের ঘটনা আপোষে সহায়তার অভিযোগ প্রসঙ্গে সোমবার রাতে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্তি উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, এরকম কিছু আমি শুনিনি।

সরকার দলীয় কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, এখন আমরা মামলার এজাহারভূক্ত সব আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। পরে তদন্তে যদি আর কারো নাম আসে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।

সেই রাতের ঘটনার পর বাবলা চৌধুরীর সাথে সাক্ষাতের কথা নিশ্চিত করে নির্যাতিন তরুণীর স্বামী রোববার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিনি (বাবলা চৌধুরী) বলছিলেন, যারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে  ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন।

এ ঘটনায় তরুণীর স্বামীর দায়ের করা মামলায় আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।

এঘটনায় এজাহারভূক্ত চারজনসহ এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলকে সোমবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

সুত্র – সিলেটটুডে

March 2025
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031