রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করেছেন, রোববার ভোর ৪টার দিকে ০১৭৮৩৫৬১১১১ মোবাইল নাম্বার থেকে কল দিয়ে তার সাথে কথা বলেন রায়হান। এসময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে টাকা নিয়ে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আসার জন্য চাচাকে অনুনয় করেন।
হাবিবুল্লাকে কল দেওয়া মোবাইল নাম্বারটি কার তা নিশ্চিত করতে পারেনি সিলেট মহানগর পুলিশ।
তবে মোবাইল নাম্বার শনাক্তকরণ এ্যাপস ‘ট্রু কলার’-এর মাধ্যমে দেখা গেছে, ০১৭৮৩৫৬১১১১ নাম্বারটি তৌহিদ নামে কোনো এক ব্যক্তির।
একটি সূত্রে জানা গেছে, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তৌহিদ নামে একজন অতিরিক্ত উপ পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) কর্মরত আছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এরকম তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।
এই নাম্বারটি কার তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
রায়হান উদ্দিনের চাচা (যিনি রায়হানের সৎ বাবাও) হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, রোববার ভোর ৪টার দিকে একটি অপরিচিত নাম্বার (০১৭৮৩৫৬১১১১) থেকে আমাকে ফোন দেওয়া হয়। ফোন ধরার পর কথা বলে রায়হান। সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতে থাকে ‘আমারে বাঁচাওরেবা। আমারে বাঁচাও।’ এরপর আমি তার অবস্থান জানতে চাইলে সে জানায়, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আছে। এসময় ফাঁড়িতে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে বলে রায়হান।
হাবিবুল্লাহ বলেন, ফোন পেয়ে সাথেসাথেই আমি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে যাই। তখন সেখানে অবস্থানরত একজন বলেন, সে (রায়হান) ঘুমিয়ে পড়েছে। এখন দেখা করা যাবে না।
এরপর পাশ্ববর্তী কুদরতউল্লাহ মসজিদে নামাজ আদায় করে সকালে আবার পুলিশ ফাঁড়িতে যান উল্লেখ করে হাবিবুল্লাহ বলেন, ফাঁড়িতে যাওয়ার পর একজন লোক আমাকে বলেন, ‘আপনি ১০ হাজার টাকা নিয়ে আসার কথাছিলো। টাকা এনেছেন?’ কিছু টাকা এনেছি জানানোর পর তারা আমাকে বসিয়ে রাখেন। এরপর ১০টার দিকে বলেন, ‘আপনার ছেলের শরীর খারাপ করেছিলো। তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। ওসমানী হাসপাতাল গিয়ে তাকে দেখতে পারবেন।’
হাবিবুল্লাহ বলেন, এরপর আমি ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পারি হিমঘরে রায়হানের লাশ পড়ে আছে। পুলিশই নির্যাতন করে রায়হানকে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ তার।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন দাবি করেন, ভোররাতে এএসআই আশিক এলাহির নেতৃত্বে রায়হানকে উদ্ধার করা হয়। ছিনতাইকারী একটি গ্রুপ তাকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে ফেলে রাখে। রায়হান নিজেও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত বলে দাবি করে তিনি জানান, কোতোয়ালি থানায় তার নামে দুটি মামলা আছে, তিনি মাদকও গ্রহণ করতেন। তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন বা টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এআর/হাকালুকি