• ২৭শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৭শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া স্বস্তি ফিরবে না-বিসিআই সভাপতি-আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৫, ২০২৫
গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া স্বস্তি ফিরবে না-বিসিআই সভাপতি-আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী

রাজধানীর তেজগাঁও বিসিআই আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ২০২৫,বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বক্তব্য রাখছেন। এসময় তিনি বলেন, ‌’আইএমএফের প্রেসক্রিপশন মেনে চলছে সরকার, এতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া স্বস্তি ফিরবে না। ব্যবসায়ীরা গণতান্ত্রিক সরকার চায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যাওয়া উচিত অন্তর্বর্তী সরকারের।’

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যত দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে বাকি সংস্কারের জন্য পথনকশা করে দিতে পারে, ততই মঙ্গল বিসিআই দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক নীতি নিয়েছে; তারল্য সরবরাহ কমিয়েছে। এগুলো দেশের অর্থনীতি, শিল্প ও ব্যবসায়ীদের জন্য অনুকূল নয়। বাংলাদেশ আইএমএফের প্রেসক্রিপশন নিয়ে কিছু জায়গায় প্রস্তুতি নিতে পারি, কমপ্ল্যায়েন্স পূরণ করার জন্য অনেক জায়গায় কাজ করতে পারি। কিন্তু, আইএমএফের প্রেসক্রিপশন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে গেলে আমাদের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

বিসিআই সভাপতি বলেন, সুদহার বাড়ানো হচ্ছে, ভ্যাট বাড়ানো ও ঋণ শ্রেণিকরণের মেয়াদ ৬ মাস থেকে কমিয়ে ৩ মাসে নিয়ে আসার মত পদক্ষেপ নেয়া হলো। আবার যখন উপদেষ্টা গভর্নরের পক্ষ থেকে বলা হয়, দাম বাড়বে না, শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য শিল্প উদ্যোক্তাদের খুবই চিন্তিত করে। যদি দেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে ভয় পায়, তাহলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কিভাবে আসবে।

ভ্যাট যা বাড়ানো হয়েছে, তাতে জিনিসপত্রের দাম তেমন একটা বাড়েনি। সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের এমন বক্তব্যকে বিভ্রান্তিমূলক বলেও মন্তব্য করেন বিসিআই সভাপতি।

রাজনৈতিক দলগুলোও অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা একে অপরকে নিয়ে নানা কথা বললেও অর্থনীতি নিয়ে কিছু বলছে না বলে অভিযোগ করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

দুই–চারজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যারা ব্যাংক লুট করেছে, তাদের দায় সবার ওপর চাপানো হলে সেটি অবিচার হবে বলে মন্তব্য করে বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বর্তমানে হতাশায় ভুগছে। ব্যবসায়ীরা চায় ইজ্জত–সম্মান নিয়ে চলতে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ঢালাওভাবে খেলাপি বলা হয়; কেন খেলাপি হলো সেটি দেখা হয় না। বিগত সময়ে বিভিন্ন কারণে যে পরিমাণে ব্যবসায়িক খরচ বেড়েছে সেটি সবার পক্ষে সামলানো সম্ভব হয়নি। এ কারণে অনেকে খেলাপি হয়েছেন। এ জন্য কি সেই উদ্যোক্তারা দায়ী হবে?

আনোয়ার-উল আলম বলেন, খেলাপি ঋণ নিয়ে সরকারের যেমন নীতি আছে, প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্বও সরকারের আছে। সুরক্ষা দিতে না পারলে উদ্যোক্তাকে ব্যবসা থেকে বিদায় নিতে হবে; কিন্তু দেশে দেউলিয়া আইন নেই। এ বিষয়ে সম্প্রতি গভর্নরের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গভর্নর এ বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির বিসিআই এর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, পরিচালক শহিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার, জাহাঙ্গীর আলম, রেহানা রহমান, শাহ আলম লিটু, নাজমুল আনোয়ার ও খায়ের মিয়া প্রমুখ ব্যবসায়ী নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।