ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) মোঃ সাইদুর রহমান, বীর প্রতীক, ই বেংগল (তৎকালীন ইউনিট ১৮ ই বেংগল)
ক্যাপ্টেন মোঃ সাইদুর রহমান, বীর প্রতীক, ই বেংগল, গত ২৫ ডিসেম্বর ১৯৭৭ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি হতে ৫ম স্বল্প মেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৮ ই বেংগল ইউনিটে কর্মরত থাকাকালীন তিনি ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ তারিখ সকালে তৎকালীন নাইক্ষ্যংছড়ি জোনের, টিও হেডম্যান পাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুপ্তাশ্রয়ের উপর একটি সফল অভিযান পরিচালনা করেন। দুর্গম অরণ্যে দুই দিন ও দুই রাতের যাত্রাপথে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান সঠিক নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত প্রদানের মাধ্যমে সৈনিকদের মনোবল বজায় রাখেন। লক্ষ্যবস্তুর নিকটে পৌঁছে তিনি দুরদর্শিতার সাথে তড়িৎ পরিকল্পনা করে সন্ত্রাসীদের উপর আচমকা হানা পরিচালনা করেন।
লক্ষ্যবস্তুর উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন উপদলকে চতুর্দিকে বিভিন্ন অবস্থানে রাখা হয়। অপারেশন চলাকালে ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান একটি মাচার ঘরে কিছু অস্ত্র দেখতে পান। কোন প্রকার কালক্ষেপণ না করে, তিনি নায়েক মোস্তফাকে পেছন থেকে কাভার করার নির্দেশ দিয়ে জীবনের মায়া ত্যাগ করে অসীম সাহসিকতার সাথে লক্ষ্যবস্তুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেনাবাহিনীর হানাদলের তড়িৎ পদক্ষেপে হতবিহ্বল হয়ে সন্ত্রাসী দল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। সন্ত্রাসী দলের নিকটে উপস্থিত উপদলের, নায়েক মোস্তফা ও ল্যান্স নায়েক খলিলের সংকেতে ক্যাপ্টেন সাইদুর দ্রুততার সাথে অবস্থান পরিবর্তন করে মাটিতে অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলিবর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী দলের তথাকথিত কর্পোরাল রূপায়ন নিহত হয়, এবং তথাকথিত লেফটেন্যান্ট পুশকিন ও সিপাহি নিবারন আটক হয়। অপারেশনে ১টি ৯ মিঃ মিঃ এসএমসি, ৬টি ৩০৩ রাইফেল, ১টি অটো রাইফেল, এবং সন্ত্রাসীদের গোলাবারুদ, সরঞ্জাম ও মূল্যবান নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে, ১৯ মে ১৯৯২ তারিখে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, ক্যাপ্টেন মোঃ সাইদুর রহমানকে বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করেন।